নিয়ম বদলের করোনা সঙ্ক্রমণ!!
একটু একটু করে সব কিছু বদলে দিলো এক নতুন মহামারী করোনা। চিকিৎসা ব্যাবস্থা সহ গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সমস্ত প্রেক্ষাপটে প্রভাব রয়ে যাবে এই করোনা সঙ্ক্রমণের। গত কয়েক মাসের সংবাদ মাধ্যম বা ডিজিটাল মিডিয়া সুত্রে আমরা অনেকটাই অবগত এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে। কিন্তু কিছু ফাঁক তো থেকেই যায় নিজের জানা ও বোঝার মধ্যে।করোনা সম্পর্কে এত ভয় কেন?ভয়ের কারণ আসলে রোগটার বয়স বড্ড কম আর একদম অজানা প্রভাব। এই করোনার মতই মারাত্মক সংক্রামক রোগ হল Chicken Pox, Measles, Tuberculosis, SARS, MERS ও আরও অনেক। একজন Pox/Measles এর রুগী তার অজান্তেই আসেপাশের দশ জন রুগীকে সংক্রামিত করতে পারেন। কিন্তু এখন যেহেতু এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা অনেক বেশী সতর্ক ও অভ্যস্ত তাই অনেক সড়গড় এই রোগের চিকিৎসায়। নিশ্চই এতদিনের খবর থেকে আপনারা আন্দাজ পেয়েছেন সারা বিশ্ব কি ভাবে এই রোগের চিকিৎসা করতে নাজেহাল হয়েছে। তিন মাস লেগে গেছে শুধু এই টুকু জানতে যে কোন ওষুধ ঠিকঠাক কাজ করবে এই অসুখে। আর এইখানেই যত বিপত্তি। রোগটি সম্পর্কে আমরা এখনও একটু হলেও ধন্দে রয়েছি। কাজেই এই রোগের চিকিৎসা বা সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্পর্কে আমরা একদম সঠিকভাবে ওয়াকিবহাল নই। যে কাজ হচ্ছে বা ভাবা হচ্ছে সম্ভাব্য সংক্রামক প্রতিরোধ এর জন্য তাও একটা আন্দাজে।নতুন নতুন একটা করে রোগ এসেছে আর তার জন্য নিয়ম বদল হয়েছে ক্রমাগত। প্রথম যখন AIDS রোগ এলো। আমরা আতঙ্কিত ছিলাম সেলুনে চুল দারি কাটানোর জন্য। নিয়ম বদল হল ব্লেড পাল্টানোর। প্রতি খদ্দেরে আমরা এখনও ব্লেড পাল্টে দারি কাটি। অনেকে তো আজও সেলুনে দারি কাটেন না। আগেকার দিনে দাঁতের ডাক্তারি খুব সহজ ছিল। যন্ত্রের বাহুল্য ছিল কম। সামান্য সাবান জলে রক্ত মাখা যন্ত্রপাতি ধুয়ে নিয়েও কাজ করা হত। সেখান থেকে শুরু হল বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ। তারপর থেকে শুরু হল ফুটন্ত গরম জলে যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে নিয়ে কাজ করা। আটকানো গেল অনেক রোগের সংক্রমণ। তারপরে এলো অটোক্লেভ। লুই পাস্তুরের আবিষ্কার করা প্রেশার কুকার অটোক্লেভ দিয়ে যাত্রা শুরু। সেখান থেকে ক্রমে আরও উন্নত হয়েছে সব ব্যাবস্থা আরও উন্নতি হচ্ছে নতুন নতুন আবিষ্কারে। কিন্তু সব নিয়মের ক্রম পরিবর্তন কে সম্পূর্ণ নতুন পথে চালিত করে দিলো করোনা সংক্রমণ।দাঁতের ডাক্তারির সাথে কি সম্পর্ক?একজন দাঁতের ডাক্তারের কাজটাই সীমাবদ্ধ মুখমণ্ডলে। করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত রুগীদের ক্ষেত্রে মূল অসুখটি শ্বাসনালীর (Upper Respiratory Infections)। আমাদের মুখগহ্বর ও নাসা পথের মধ্যে এই ভাইরাস স্থায়ী হয়। কিছু গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয়েছে এই ভাইরাস নিজের গোপন সুরক্ষিত আস্তানা বানিয়েছে মানুষের লালা গ্রন্থিতে (Salivary Glands)। আর এখানেই আমাদের দাঁতের ডাক্তারদের মূল সমস্যা। আমাদের কাজে থুতুর অংশীদারি সবচেয়ে বেশী। রুগীরা আমাদের কাজের চেয়ারে বসে থুতু ফেলবেন। আমরা যে যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করি, যেমন রুট ক্যানাল ট্রিটমেন্ট, দাঁতের ফিলিং করা, দাঁত বাধানো, দাঁতের ক্রাউন ব্রিজ বানানো, স্কেলিং বা দাঁত পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজে। সেই যন্ত্রপাতি থেকে মাইক্রো ড্রপলেট (Micro droplets) আকারে জলকণা তৈরি হয়। সেগুলি মুখের ভিতরে ধাক্কা খেয়ে বাইরে ছিটকে আসে। আর সঙ্গে আসে রক্ত, থুতু, মাইক্রো অর্গানিজম কিছু। একে বলে এয়ারোসল জেনারেটিং প্রসেডিয়োর।(AGP)এয়ারোসল (Aerosol) এর বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়; একরকম সূক্ষ্ম দ্রবণের কণা যা বাতাসে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়ে ভেসে বেরাতে পারে। এই এয়ারোসল আমাদের স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস, কথা বলা, হাঁফানো, বা হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে তৈরি হয়। হিসেব করে দেখা গেছে, একজন মানুষ কোন রকম স্থান পরিবর্তন না করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হাঁচি দিলে, তার মুখ থেকে তৈরি এয়ারোসল বাতাসের মাধ্যমে প্রায় আট ফুট অব্দি দূরত্ব অতিক্রম করে মাত্র ২-৩ সেকেন্ডে। এর একটা খুব স্বাভাবিক উদাহরণ যেমন আপনার থেকে প্রায় দশ ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে কোন ব্যাক্তি বিড়ি বা সিগারেট ধরালে আপনি কোন রকম স্থান পরিবর্তন না করলেও গন্ধ পাবেন ৪-৫ সেকেন্ডের মধ্যেই। আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে সব থেকে বড় বিপদ।দাঁতের ডাক্তারের কাছে আসলে তাহলে কি কি নিয়ম মানতে হবে?Ø প্রথম নিয়ম এবং সব থেকে কড়া নিয়ম মাস্কের(mask) ব্যাবহার। ডাক্তার না বলা পর্যন্ত আপনাকে মাস্ক পরেই থাকতে হবে। মাস্ক ছাড়া চেম্বারে আসা মানে নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনা। ডাক্তার নিজের সম্ভাব্য সব রকমের প্রতিরোধ ব্যাস্থার আড়ালে থাকবেন। কিন্তু ঠিক আপনার আগেই আসা রুগী যদি করোনা সংক্রামিত হয়ে থাকেন। তার শ্বাস প্রশ্বাসে তৈরি হওয়া এয়ারোসল আপনাকে সংক্রামিত করে দেবে।Ø দ্বিতীয় নিয়ম সামাজিক দূরত্ব (Social distancing) বজায় রাখা। চেম্বারের ভিতরে বা বাইরে ভীর দেখলে অবশ্যই এড়িয়ে যান। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন। আমাদের কাজের জন্য রুগী প্রতি গরে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে। ভিতরে কোন রুগীর কাজ চলছে আন্দাজ পেলে চট করে ভিতরে আসবেন না। একজন রুগীর কাজ হয়ে যাওয়ার পরে প্রায় ১০-২০ মিনিট সময় লাগে সব কিছু পরিষ্কার করে নিতে। বাতাসের স্বাভাবিক হতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা। কাজেই ভুল করেও চেম্বারে ভীর থাকলে ভিতরে আসবেন না।Ø এমন হলে কি করে চলবে? একটা চেম্বারে ভীর তো হতেই পারে। তাই বলে চেম্বারে আসব না? এখানেই DCI থেকে নিয়ম লাঘু হয়েছে। আমার চেম্বারে আমি আগেও রুগীদের জন্য আলাদা আলাদা সময় করে কাজ ভাগ করে নিতাম। কোন কারণে আগের রুগী দেরী করে আসলে পর পর কাজের জন্য ভীর হয়ে যেত। এখন থেকে এই নিয়ম পাল্টে যাবে। প্রতি ঘণ্টায় কেবল মাত্র একটি রুগীকেই দেখা যাবে। তাও কাজের ওপর নির্ভর করে। যেমন একজন রুগী যার স্কেলিং হবে। তার কাজ শেষ হওয়ার পরে অন্তত এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে তবেই পরের রুগীকে ভিতরে আসতে দেওয়া যাবে। এই কারণে প্রত্যেক রুগীর কাছে আমার অনুরোধ, ঠিক সময়ে আসার চেষ্টা করবেন। কোন কারণে দেরী হতেই পারে। সেক্ষেত্রে আগে থেকে ফোন করে জানিয়ে দেবেন। যদি না আসতে পারেন তাহলে সেটাও জানিয়ে দেবেন আগে থেকে। সময় মত এসেও যদি দেখেন আপনার আগের রুগীর কাজ তখনও শেষ হয়নি। তাহলে বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করবেন। কোন বদ্ধ জায়গায় দাঁড়াবেন না। যেখানে হাওয়ার চলাচল রয়েছে সেখানে দাঁড়াবেন। সংক্রমণের সম্ভবনা কমবে।Ø দাঁতের ডাক্তারের কাছে পরিবার নিয়ে এক সাথে আসবেন না। কেবল মাত্র বাচ্চা, বয়স্ক মানুষ ও মহিলা রুগীদের সঙ্গে একজন করে বাড়ির লোক চেম্বারে আসতে পারেন। কোন শিশু যদি রুগী না হয় তাহলে তাকে নিয়ে চেম্বারে আসবেন না। নিতান্তই আসলে তাকে সঙ্গে নিয়ে সামলে রাখতে হবে। ছোট বাচ্চারা অজান্তে বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে পারে। তার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অনেক সময় সংক্রমণ আটকানোর জন্য আমরা যেসব কেমিক্যাল ব্যাবহার করি সেগুলো বাচ্চাদের হাতে লাগতে পারে। এবং সেটা বাচ্চাদের মুখে গেলে খারাপ। কাজেই কোন ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এলে অবশ্যই তাকে সামলে রাখতে হবে।Ø আপনি যদি কিছুদিন ধরে শ্বাস কষ্ট, জ্বর, বা সর্দি কাশি নিয়ে ভুগছেন। তাহলে অতি অবশ্যই আপনার দাঁতের ডাক্তারের কাছে আসা যাবেনা। হতেই পারে আপনি করোনা রোগে সংক্রামিত নন। কিন্তু এই অজানা রোগের ও রুগীর ভীরে আমরাও নিশ্চিন্ত নই কোন রুগী করোনা বহন করে আনবে। আপনি নিজের ইমিউন সিস্টেম এর দুর্বল মুহূর্তে সংক্রমণের মধ্যে এলে আপনার বিপদের সম্ভাবনা শতকরা নব্বই ভাগ।Ø আপনি নিজেও হয়ত জানেন না আপনি করোনা রোগে সংক্রামিত। বাজারের ভীরে হোক, কোন প্রবাসী আত্মীয় বা পরিবারের অন্য কারো থেকে কোন ভাবে আপনার শরীরে রোগটি হয়ত এসেছে। কিন্তু আপনার ইমিউন সিস্টেম (Immunity) এর কারণে সেটি প্রভাব ফেলতে পারেনি। ঠিক এই কারণে নিজের গতিবিধির যথাযথ বিবরণ ডাক্তারের কাছে স্বীকার করুন। কোন কারণে যদি সন্দেহ থাকে যে আপনি গত এক মাসের মধ্যে হয়ত কোন ভাবে সংক্রামিত হয়েছেন অন্য কোন মানুষের থেকে। সে কথা ডাক্তারের কাছে উল্লেখ করুন। সেক্ষেত্রে ডাক্তার, আপনার জন্য ওষুধের তালিকা সঠিক ভাবে নির্ধারণ করতে পারবেন। অনেক ওষুধ আছে যা আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেমএর স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। দাঁত তোলা বা রুট ক্যানাল চিকিৎসায় হয়ত করোনা রোগটি রক্তের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার আপনার শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।চেম্বারে আসার পরে, একটি প্রশ্ন তালিকা আপনাদের দেওয়া হবে। প্রতিটি প্রশ্ন ভালোভাবে পড়ে তার যথাযথ উত্তর দেবেন। এই তালিকার সাথে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। তার মধ্যে নিজের নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করবেন। এই ফর্ম, ট্রেসিং (Contact tracing) এর কাজে ব্যাবহার হবে। ধরুন কোন কারণে যদি ডাক্তার নিজে এই রোগে সংক্রমিত হয়ে যায়। তখন এই ফর্মগুলির মাধ্যমে প্রশাসন আপনাদের ট্রেস (Trace) করতে পারবে ও প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে পারবে। কোন রকম তথ্যের গোপনীয়তা আপনার জন্যেই সহায়ক হবে না।
কোন কোন কারণে একজন ডাক্তার আপনার চিকিৎসা করতে বিরত থাকতে পারেন?
DCI (Dental Council of India) এর দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী একজন ডাক্তারকে তার রুগী নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। *The Dental surgeon reserves right to treat/defer/refer/ me accordingly. (IDA, WB state branch published COVID-19 advisory for dental practice; page 16)
আমার চেম্বারে যে যে রুগীর চিকিৎসা করা সম্ভব নয় পরিকাঠামোগত কারণে তা হল,১) আপনি যদি February'2020 এর পরে বাইরের কোন দেশ বা রাজ্য থেকে ফিরে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসা করা যাবে না।২) আপনার পরিবারের কেউ, যে আপনার সাথেই থাকেন, তাদের মধ্যে কেউ বাইরের দেশ বা রাজ্য থেকে February'20 এর পরে এদেশে ফিরে থাকলে আপনার চিকিৎসা করা যাবে না।৩) আপনার বাসস্থান যদি কোন করোনা সংক্রামিত এলাকার হয়, সরকারী ভাবে ঘোষিত রেড জোন (Containment zone), সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসা করা যাবে না আমার চেম্বারে।৪) আপনি নিজে যদি করোনার রুগী হয়ে থাকেন, বা আপনার পরিবারের কেউ করোনা সংক্রামিত হয়ে থাকলে আপনার চিকিৎসা করা যাবে না।৫) কোন কারণে একজন করোনা সংক্রামিত রুগীর সংস্পর্শে আপনি এসে থাকলে আপনার চিকিৎসা সম্ভব নয়। নিতান্তই যদি না করোনা নেগেটিভ এর রিপোর্ট আপনার কাছে থাকে।৬) আপনি যদি শ্বাস কষ্টের রুগী হয়ে থাকেন, এবং নয়মিত ইনহেলার (Inhaler) ব্যাবহার করে থাকেন, তাহলে আপনার চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।৭) আপনি যদি ডায়াবেটিস এর রুগী হয়ে থাকেন এবং আপনার HbA1C >6.8% এর উপরে হয়ে থাকে। আপনার চিকিৎসা সম্ভব নয়।৮) যে সকল রুগী হার্টের সমস্যার জন্য নিয়মিত রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান। যেমন Deplat/Ecosprin জাতীয়। তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সম্ভব নয়।৯) নিয়মিত Steroid জাতীয় ওষুধ যাদের খেতে হয়, তাদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসা সম্ভব নয়।চিকিৎসা সম্ভব নয় কেন?
চিকিৎসা সম্ভব নয় মানে রুগীকে দেখে ওষুধ দেওয়া যাবে না তা নয়। কোন রকম কাজ যেমন রুট ক্যানাল ট্রিটমেন্ট, দাঁত তোলা, দাঁত বাধানো ইত্যাদি কাজ করা যাবে না। এই সিদ্ধান্তের কারণ, এরকম রুগীর চিকিৎসা করার জন্য যে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত ব্যায়বহুল।
এখন সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যাবস্থা যন্ত্র নির্ভর ও উপযুক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়া নির্ভর। ইদানিম যে যে যন্ত্রের বাহুল্য ও ব্যাবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা কোন হাসপাতাল বা বড় ক্লিনিকে সম্ভব। যেখানে একটি ঘর সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যাবহার করা যাবে। আমার চেম্বারে এই মুহূর্তে এই ব্যাবস্থা করা সম্ভব নয়। প্রথমত কোন রকম সরকারী অনুদান বা সাহায্য আমরা পাইনা। দ্বিতীয়ত এই সব যন্ত্রের দাম ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ রুগীর থেকেই নিতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসার খরচ অতিরিক্ত হয়ে যাবে একজন সাধারণ রুগীর জন্য।
একটি সামান্য উদাহরণ দিয়ে বললে হয়ত বোঝাতে সুবিধা হবে। কিছু দিন আগে পর্যন্ত রুট ক্যানাল চিকিৎসার জন্য আমরা যে ফাইল বা সরু তারের মত যন্ত্রগুলি ব্যাবহার করতাম, তা Sterilize করে নিলে অন্তত তিন জন রুগীর কাজে ব্যাবহার করা যেত। এক একটি ফাইলের দাম প্রায় ৩৯০ টাকা। এখন যা নিয়ম এসেছে, সেই অনুযায়ী একজন রুগীর মুখে ব্যাবহার করা ফাইল কোন ভাবেই পরের রুগীতে ব্যাবহার করা যাবে না। ব্যাবহার হয়ে গেলে সেটিকে ফেলে দিতে হবে। এখানেই বোঝা যাচ্ছে, আগে যেখানে একজন রুগীর থেকে ফাইল প্রতি ১৩০ টাকা নিলে দাম চলে আসতো, এখন থেকে রুগী প্রতি এক একটি ফাইলের জন্য ৩৯০ টাকা নিতে হবে। আনুসাঙ্গিক খরচ ও ডাক্তারের ভিজিট আলাদা।
নিয়মের বেড়াজালে এখন সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যাবস্থা অনেক জটিল হয়ে উঠেছে। আপনাদের থেকে নির্ভরযোগ্য সহযোগিতা পেলে আবার চেম্বারের কাজ শুরু করা যাবে। সময় লাগবে একটু এই রোগের থেকে বেড়িয়ে আসতে বা সব নিয়ম কে অভ্যাস করে নিতে। কিন্তু চেষ্টা করলে আমরাই পারবো সংক্রমণ কে রুখে এই রোগ কে সমাজ থেকে সরিয়ে দিতে.
Dr. Arka Bhattacharya, BDS
Consultant Dental Surgeon
DentArk Dental Clinic
54, NSC Bose Road, Mahamayatala, Kolkata 84
Contact 9874201532 (Whatsapp)
No comments:
Post a Comment