Saturday, June 6, 2020

Corona Test

 

করোনা পরীক্ষার খুঁটিনাটি 

Coronavirus News on Screen
Pexels

বর্তমান ভারতে করোনা সংক্রামিত রুগীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ পেরিয়ে গেছে। ডাক্তারদের আশঙ্কা আগামী কয়েকদিনে এই পরিসংখ্যান আরও বাড়বে। 

সংক্রামিত রুগী এবং কোন উপসর্গ ছাড়া এই রোগের বাহক কে খুঁজে বের করা এখন সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক ডাউন উঠে যাওয়ার পরে এই তফাৎ করা আরও কঠিন। 

কিন্তু কোন ভাবে তো আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে কাটিয়ে উঠতে হবে। সংক্রামিত রুগী এবং উপসর্গহীন বাহকদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদা করে রাখা এবং চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে। 

জীবন বিজ্ঞানের জটিল অধ্যায়গুলির সব থেকে জটিল কিছু কারগরি নিয়ে এখন করোনা রোগের পরীক্ষা করা হচ্ছে। 

সব থেকে সরল ভাষায় যদি বলা যায় এই পরীক্ষার নাম  RT-PCR or, Reverse Transcriptase Polymerase Chain Reaction & Rapid Antibody Test। 

সত্যি কথা। এত সরল ভাষায় বললাম কথাগুলো যেন বর্ণ পরিচয়ে এই অ আ শেখার মতন এই নামগুলির সাথে সবাই পরিচিত। 

দেখুন যদি এই উদাহরণ শুনে একটু সরল বলে মনে হয়। 

আজকাল প্রায় প্রতি ঘরেই ডায়াবেটিস রুগী রয়েছেন। প্রতি মাসে রক্তে সুগার এর মাত্রা পরীক্ষা করে দেখার জন্যে অনেকেই স্থানীয় কোন পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসেন, বা কোন রক্তের নমুনা সংগ্রহকারী কর্মচারী এসে বাড়ি থেকে আপনার রক্তের স্যাম্পেল নিয়ে যায়। 

একটি শিশির মতন জিনিসে তারা সেই রক্তের নমুনা রেখে নির্দিষ্ট নাম ও বিল নম্বর লিখে দেয় তার উপরে। তারপর সেটা ল্যাবে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কেমিক্যাল ও যন্ত্রের সহায়তায় পরীক্ষা করে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা দেখা হয়।
Two Test Tubes 
Pexels

ঠিক এই ভাবেই নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখার কাজ হল RT-PCR or, Reverse Transcriptase Polymerase Chain Reaction। এই পরীক্ষা করতে মোটামুটি ২-৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। নমুনা সংগ্রহ করা, তাদের একত্রিত করে পাঠানো, নমুনা কে প্রস্তুতি করা। এই সব কাজ মিলিয়ে মোটামুটি ১-২ দিন সময় চলে যায়। আমাদের এখানে ল্যাবের সংখ্যা কম বলে এই পরীক্ষা করতে আরও কিছুটা বেশী সময় লাগছে।

আরেকটি হল Rapid Test Kit.। অনেকেই এখন বাড়িতে মেশিনের সাহায্যে নিমেষে রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন তাদের রক্তে সুগারের মাত্রা কত। এই Rapid Test Kit এর কাজ ও অনেকটা সেরকম। এই পরীক্ষা করতে মোট সময় লাগে ১৫-২০ মিনিট। অর্থাৎ রক্তের নমুনা নির্দিষ্ট যন্ত্রের মধ্যে দেওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনি জানতে পেরে যাবেন আপনি করোনা সংক্রামিত রুগী নাকি কোন সময় আপনি হয়ত করোনা ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হয়েছিলেন অথচ উপসর্গ না থাকায় বুঝতে পারেন নি। 

RT-PCR আসলে কি???

Reverse Transcriptase Polymerase Chain Reaction আসলে একটি সংগৃহীত নমুনার উপর জেনেটিক পরীক্ষা করে দেখা। 


নমুনা সংগ্রহ হয় কি ভাবে??

করোনা ভাইরাস মূলত মানুষের শরীরে upper respiratory tract infection (URTI) করে।অর্থাৎ শ্বাসনালীর সংক্রমন। তাই নমুনা সংগ্রহের জন্যে নাকের ভিতরের অংশ আর গলার ভিতর দিকের অংশ থেকে swab stick, অনেকটা ওই ear buds এর মতন দেখতে, দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

মোটামুটি সবাই আমরা DNA ও RNA শব্দ দুটির সাথে পরিচিত। PCR বা polymerase chain reaction পরীক্ষা হল কোন একটি মাধ্যমে একটি বিশেষ DNA এর উপস্থিতি জানার পরীক্ষা। 

সে কি মশাই, তাহলে খবরের কাগজে যে বলল করোনা ভাইরাস একরকম RNA ভাইরাস?

নিঃসন্দেহে খবরের কাগজ সত্যি কথাই বলেছে। আর এই ভাইরাসের RNA থাকার কারণেই নমুনা পরীক্ষা নাম RT বা reverse transcriptase PCR।

অনেকে আবার RT কে Real Time PCR ও বলছেন।


এই Reverse Transcriptase ব্যাপারটা কি??

খুব জটিল ধাঁধার মধ্যে না গিয়ে একটু সরল করে নেওয়ার চেষ্টা করি। 

কল্পনা করুন আপনার সামনে একটা মই পরে আছে। জীবের মধ্যে থাকা DNA ওই মই এর মতন দেখতে। দুপাশে হাতল আর মাঝে পা রাখার জায়গা। 

এবার যদি কেউ মইটাকে পা রাখার জায়গায় মাঝ বরাবর কেটে ফেলে তাহলে কেমন দেখতে লাগবে কল্পনা করুন। RNA কে দেখতে ঠিক সেই রকম। আধ কাটা মই এর মতন। 



সে তো বুঝলাম। কিন্তু DNA আসছে কোথা থেকে? পরীক্ষাটা তো DNA কে নিয়ে?

নিশ্চই। এখানেই তো Reverse Transcriptase এর ভূমিকা। 

আপনার কাছে খুচরো এক টাকা দিয়ে ধরুন ১০০ টাকা রয়েছে। এবার এত খুচরো নিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যা। তাই আপনি এক দোকানীর কাছে গিয়ে খুচরো টাকা দিলেন আর সেটা নোট করিয়ে নিলেন। দোকানদার আপনাকে দুটো পঞ্চাশ টাকার নোট দিয়ে দিল। এতে আপনার খুচরো সমস্যা মিটে গেল আর হাতে নোট এসে গেল। 
50 Euro Banknote Folding on Top of Piled Coins
Pexels

এই পরীক্ষায় reverse transcriptase এর ভূমিকা ঠিক ওই দোকানীর মতন। সে RNA তে কি হিসাব আছে দেখে নিয়ে দুটি নোটের মতন সমান অর্থ মূল্যের দুটি DNA strand এর মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ নব গঠিত DNA বানিয়ে দেয়। এই DNA এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একদম করোনা ভাইরাস এর RNA এর মতন। আর এই DNA এর উপরই পরীক্ষা করা হয় PCR।


বাহ বা! এত্ত সব। তো এই PCR বস্তুটি কি??

খবরের কাগজ কেমন ভাবে ছাপা হয় দেখেছেন?? PCR কে সোজা কথায় বললে ঠিক তাই। খবরের কাগজের সম্পাদক লিখিত বা টাইপ করা সব খবরগুলো কে একত্রিত করে ছবি দিয়ে, বানান সংশোধন করে ইত্যাদি আরো নানা খুঁটিনাটি editing করে কাগজের পূর্ণ রূপ দেন। 

এই সম্পাদকের কাজের অংশটি হলো sample তৈরি করা থেকে reverse transcriptase দিয়ে DNA প্রস্তুতি অব্দি অংশ। একবার যখন সব ঠিক ভাবে সাজিয়ে পূর্ণ রূপ দেওয়া হয়ে গেল, সম্পাদক মশাই কাগজটি ছাপার যন্ত্রে দিতেই ঘরঘর শব্দ তুলে কাগজের মেশিন পত্রিকা ছাপার কাজ শুরু করে দেয়। একটা আধটা নয় অনেক কাগজ। PCR ও ঠিক তাই। একবার DNA প্রস্তুত আছে নির্দেশ পেতেই সে একই রকম দেখতে অনেক DNA তৈরি করতে শুরু করে।


এত ঝামেলা কিসের জন্যে? DNA তো তৈরি হয়েছে। আবার বেশী বেশী করে বানানোর প্রয়োজন কিসে??

মেলার ভিড়ের মধ্যে একটা বাচ্চা হারিয়ে গেলে যেমন তাকে খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। DNA নিজেও এতই ক্ষুদ্র একটি অণু, যে তার একার উপস্থিতি নজর করা খুব কঠিন। 
বিপরীতে, একদল স্কুলের বাচ্চা যখন এক জায়গায় হল্লা করে আপনি দূর থেকেও আন্দাজ পাবেন তাদের উপস্থিতি। DNA এর ক্ষেত্রেও সেই একই ব্যাপার আর কি। আসলে, 'সংখ্যা গরিষ্ঠ' ব্যাপারটি একেবারে আণবিক স্থান থেকেই রয়েছে আমাদের মধ্যে। 


এতগুলো যে DNA তৈরি হল। তারা যে আদৌ করোনা ভাইরাসের RNA সমতুল্য কিনা বুঝবে কি করে??

একেবারে মোক্ষম জায়গায় প্রশ্ন করেছেন মশাই। একেবারে ঠিক কথা। এত খরচ করে এত DNA তৈরি হলো কিন্তু আদৌ সে টা করোনা ভাইরাসের কি না জানবো কি করে?

বাইরের দেশে গেলে VISA বলে একটি অনুমতি পত্র লাগে নিশ্চই জানেন। আপনি এমনি একটা কাগজে সেই দেশের মতন দেখতে একটা জালি visa বানিয়ে চলে গেলেন আর তাতেই আপনি ওই দেশে ভ্রমণের সুবিধা পাবেন। না ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই ওরকম নয়। Immigration office এ যেমন আপনার দেওয়া সব তথ্য যাচাই করে দেখে তবেই আপনাকে দেশের ভিতর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই PCR পরীক্ষার আগে একটি immigration office আছে। একে তাত্ত্বিক ভাষায় probe বলা হয়। এই probe বা primer একদম খোদ করোনা ভাইরাসের RNA এর নমুনা থেকে বানানো। কাজেই RT পদ্ধতিতে তৈরি হওয়া DNA যদি আদৌ করোনা ভাইরাসের না হয় তাহলে PCR পদ্ধতি চালু হবেই না। 




আরে বাপরে! মশাই এ যে পদে পদে বিস্ময় ???

আরে দাঁড়ান মশাই বিস্ময়ের আর দেখলেন কি?? এত যে DNA তৈরি হল, বলুন দেখি তার উপস্থিতি আমরা মানস চক্ষে জানবো কি করে?? 

কি করে জানবো??

হুমম!!! সবুজ রঙ দেখে। 

মানে? এখানেও সবুজ রঙ???

আরে বাবা সব জায়গায় রাজনীতি দেখার কোন মানেই হয় না। এই সবুজ রঙের সাথে ওই সবুজের কোন সম্পর্ক নেই। 

তো এই সবুজ রঙটা আসে কি করে??

এক বিশেষ ধরনের ফ্লুরোসেন্ট ডাই থেকে। বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে SYBR Green নাম দেওয়া হয়েছে। এই ডাই এর বিশেষত্ব হলো এরা নতুন তৈরি হওয়া DNA এর ঠিক মাঝ বরাবর, অর্থাৎ কল্পনা করা মই এর পাদানি তে জুড়তে থাকে।

যত বেশী বাচ্চার সংখ্যা তত বেশি জটলা। ঠিক সেরকম যত বেশী DNA, তত বেশি সবুজ রঙের উপস্থিতি। একটি scanner যন্ত্রের মাধ্যমে এই সবুজ রঙের উপস্থিতি আর ঘনত্ব বা intensity বোঝা যায়। 

আর এই সবুজ রং তৈরি হওয়া মানে রুগীর থেকে নেওয়া sample এ করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি আছে। আর এই যে এমন তাৎক্ষণিক ভাবে DNA এর উপস্থিতি দেখে রোগ নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে বলেই একে Real time PCR ও বলা হয়।




তাহলে ঐ Rapid Antibody test কি জিনিস??

এইটা একটু সহজ সরল পরীক্ষা পদ্ধতি। মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে করোনা আছে কি নেই জানা যায় এই পরীক্ষার মাধ্যমে। 


এটাও কি ওই DNA তৈরি করে?? 

না। এই পরীক্ষা ওই ঘরের মধ্যে Acucheck দিয়ে blood সুগার দেখার মতন। এক ফোঁটা রক্ত নিয়ে এই মেশিনে দিলে ১৫-২০ মিনিট পরে এই যন্ত্র জানান দেবে রুগী করোনা আক্রান্ত হয়েছে কি না বা গত এক মাসের মধ্যে কখনো করোনা দ্বারা সংক্রামিত ছিল কি না।

বাঃ বা! এক মাসের হিসেব জানবে কি করে???

আচ্ছা! আমাদের দেশে ধরুন border থেকে কিছু উগ্রপন্থী ঢুকে পরলো দেশের ভিতর। তাদের কে আটকাবে বলুন দেখি? 

কেন?? মিলিটারি।
ঠিক তাই। আমাদের শরীরেও কোন বাহ্যিক বস্তু ঢুকে গেলে একরকম কেমিক্যাল তৈরি হয়। যা ওই আমাদের মিলিটারির মতন কাজ করে। বিজ্ঞানীরা একে Ig M নাম দিয়েছে। কেমন নাম? M দিয়ে মিলিটারি।  এদের কে Antibody বলা হয়। যেমন রোগ, তার জন্যে ঠিক সেই antibody। এটাই নিয়ম। বোঝা গেল?

নিশ্চই। তারপর??
এবার যদি মিলিটারির চোখ এড়িয়ে কিছু উগ্রপন্থী একেবারে দেশের মধ্যে চলে এলো। তখন দেশের কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকরী হয় বলুন দেখি??

কে হয়?

একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ আর স্থানীয় প্রশাসন। শরীরের ক্ষেত্রেও তাই। পাশ কাটিয়ে কোন জীবাণু শরীরে দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়ে গেলে আমাদের শরীর IgG নামের একটি antibody তৈরি করে। আর এই antibody দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। প্রতিটি আলাদা আলাদা রোগের জন্যে এই antibody ও আলাদা আলাদা হয়।


এই rapid test kit টির কাজ সেই IgM আর IgG কে খোঁজা। PregaNews এর মতই দেখতে অনেকটা। 

Kit এর এক প্রান্তে রক্তের নমুনা দেওয়ার জায়গা আছে। সেখানে এক ফোঁটা রক্ত রেখে buffer add করতে হয়। 

Buffer কি জিনিস?
দুধে জল মেশানোর মতন বলতে পারেন। এক ফোঁটা রক্তকে একটু তরল অবস্থায় না রাখলে পরীক্ষা হবে না। তাই buffer যোগ করার নিয়ম।

বেশ, তারপর??
Buffer দেওয়া মাত্রই রক্তের serum সেই buffer এর সাহায্যে kit এর দৈর্ঘ্য বরাবর যেতে পারে। অনেকটা সেই আগেকার দিনের Hicks thermometer এর মতন। উত্তাপ পেলেই পারদ যেমন এগোতে থাকে। ঠিক সেইভাবে buffer দিলেই kit এর নির্দিষ্ট scale বরাবর serum এগিয়ে যায় আরেক প্রান্তের দিকে। 
Person Holding Thermometer
Pexels

এই স্কেলে নির্দিষ্ট দূরত্বে, অনেকটা ঠিক ওই thermometer এর মতই দাগ কাটা থাকে।

একদম শেষ প্রান্তের যে দাগ তাকে C line বা Control Line বলা হয়। এই দাগ বরাবর test kit এ line তৈরি হলে বুঝতে হবে পরীক্ষা সফল হয়েছে। অর্থাৎ kit টা খারাপ নয়। C line তৈরি না হলে বুঝতে হবে kit টা খারাপ আছে।

C line ছাড়া যদি আর কোন দাগ না তৈরি হয় তাহলে আপনার শরীরে করোনা সংক্রমন হয়নি। অর্থাৎ আপনি করোনা negative

অন্য দুটি scale এর মধ্যে একটি হলো IgM আর অপর টি IgG।

IgM এর জায়গায় marking এলে বুঝতে হবে আপনি গত এক সপ্তাহের মধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন এবং আপনার শরীরের প্রাথমিক সুরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করতে শুরু করেছে। 

IgG এর marking এলে বুঝতে হবে আপনি প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগেই সংক্রামিত হয়েছেন। 

IgM ও IgG দুটো marking এলে বুঝতে হবে করোনা ভাইরাস আপনার শরীরে বেশ উগ্র পন্থা নিয়ে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছে। আপনার শরীরে কোন উপসর্গ নাও থাকতে পারে, কিন্তু আপনি যে করোনা আক্রান্ত সেটা প্রমাণিত হয়।

শুধু যদি IgG এর marking আসে আর IgM এর দাগ না আসে? তাহলে আপনি গত এক মাস আপনার শরীরে করোনা সংক্রমন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হতে পারে আপনার শরীরে এখন হয়ত করোনা ভাইরাস নেই। কিন্তু কিছুদিন আগের তৈরি হওয়া IgG antibody আপনার শরীরে থেকে গেছে। এই antibody প্রায় ৬০-৭০ দিন অব্দি শরীরে স্থায়ী হতে পারে।


সব গুলিয়ে গেল??

Thermometer এর 98.4° F এর দাগ হলো আপনার করোনা rapid test kit এর C line। এবার 100°F এর line হলো IgM line। অর্থাৎ জ্বর আপনার নিশ্চই হয়েছে। আর 102°F এর দাগ মানে আপনার জ্বরের প্রকোপ যথেষ্ট বেশী। 

খুব সাবলীল ভাষায় বললেও এত সোজা সরল গল্প নয়। এই test kit এ ভুল হওয়ার সম্ভবনা বেশি। প্রথমত বেঠিক ব্যবহার। দ্বিতীয়ত kit টি প্রস্তুতির সময় কোন ত্রুটি থেকে গেলে। কিন্তু তবুও ৯৪% ক্ষেত্রে এই test kit এর উপর ভরসা করা যায়। আর এই test এর খরচ ও খুব কম।



কোথায় হচ্ছে এই পরীক্ষা??

কলকাতার বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালে ইতিমধ্যে এই Rapid Antibody test  পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভা এই পরীক্ষা নিয়মিত করছে। 

করোনা রোগের সংক্রমণ নিয়ে কোন হাসপাতালে ভর্তি হলে RT-PCR পরীক্ষা করা হচ্ছে। 



আর কোন বিকল্প পরীক্ষা আছে? 

ইতিমধ্যে পিয়ারলেস হাসপাতালে, পঞ্ছসায়র, একটি নতুন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একে CBNAAT, Cartridge Based Nucleic Acid Amplification Test বলা হয়। গোটা পদ্ধতিটাই RT-PCR পরীক্ষার মতই। কিন্তু এখানে জটিলতা কম এবং সময় ও অনেক কম লাগে। 



কখন এই পরীক্ষা করানো উচিৎ?

কোন রকম করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে আপনার এই পরীক্ষা করানো হবে। 
RT-PCR পরীক্ষার জন্যে খরচ আনুমানিক ৫০০০ টাকা থেকে শুরু হয়। যদি বাইরের কোন ল্যাবে এই পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় তাহলে খরচ একটু বাড়ে।  

Rapid Test Kit এর মাধ্যমে পরীক্ষার খরচ অনেকটাই কম। ২০০০-২৫০০ টাকার মধ্যে এই পরীক্ষা করা যায়। কোন কোম্পানির টেস্ট কিট  ব্যাবহার হচ্ছে তার উপরে এর খরচ নির্ভর করে। ইতিমধ্যে ভারতীয় অনেক সংস্থা এই পরীক্ষার কিট তৈরি করে ফেলেছে। এই কিট বাজারে এসে গেলে খরচ আরও কমে যাবে। 
ইতিমধ্যে আমেরিকা ও ইউরোপের কিছু দেশে এই কিট online এ কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের এখানেও শুরু হলে তখন ঘরে বসেই আপনিও নিজের পরীক্ষা করে নিতে পারবেন। ঠিক যেমন এখন ঘরে বসে নিজের রক্তে সুগারের মাত্রা দেখে নেওয়া যায়। 



দুটো পরীক্ষার মধ্যে কোনটা বেশী নির্ভরযোগ্য?

দুটো পরীক্ষাই নির্ভরযোগ্য। কিন্তু RT-PCR পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপনার শরীরে বর্তমানে ভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়।


 



Presented by,

Dr. Arka Bhattacharya





No comments:

Post a Comment

Narcissistic Personality Disorders??

Narcissistic Personality Disorders This is an era of social media. When someone posts too many selfies or pictures about their d...